অদ্ভুত দেশ উরুগুয়ে। চাইলে যাকে খুশি বিয়ে করতে পারবেন
অদ্ভুত দেশ উরুগুয়ে ! এই দেশে চাইলে যে কাউকে বিয়ে করা যায় || Uruguay amazing fact in Bangla
- Advertisements -
আজকের এই পোস্টে আপনাদের জানাবো দক্ষিন আমেরিকার একটি ছোট্ট দেশে। এই দেশটির নাম হল উরুগুয়ে। এই দেশ টি ফুটবল খেলার দিক থেকে সবার কাছে অতি পরিচিত। সেই সাথে এই দেশের চাকচিক্য ও জনগনের বিলাশ বহুল জীবন যাপন দেখলে, আপনা সত্যিই অনেক অবাক হয়ে যাবেন। তাহলে চলুন, আজকে আমরা ভ্রমণ করে আসি সেই উরুগুয়ে (Uruguay) দেশ টি থেকে। এবং সেই সাথে আমরা জেনে নেব এই উরুগুয়ে দেশ সম্পর্কে এমন কিছু চমক প্রদ তথ্য। যেগুলো হয়তো এখনো আমাদের অনেকের কাছেই অজানা রয়ে গেছে।
দক্ষিন আমেরিকার মহাদেশের দক্ষিন পূর্ব উপকুলের দিকে ব্রাজিল ও আর্জেনটিনা দেশের মধ্যে অবস্থিত এই উরুগুয়ে দেশ টি। এই দেশ টি হল দক্ষিন আমেরিকার দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম একটি দেশ। ১৯ শতকের শুরু পর্যন্ত উরুগুয়ে দক্ষিন আমেরিকার স্প্যানিশ সম্রাজ্যের একটি অংশ হয়ে ছিল। তারপর কিছু সময় ব্যাপী এই উরুগুয়ে দেশটি পর্তুগীজদের অধীনে ছিল। ১৮২৮ সালে এই উরুগুয়ে দেশ টি তার স্বাধীনতা লাভ করতে সক্ষম হয়।
এই উরুগুয়ে দেশ টি দেখতে এতটাই সুন্দর তম যে, এই দেশ টিকে দক্ষিন আমেরিকার (South America) সুইজারল্যান্ড বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এই উরুগুয়ে দেশ টির জাতীয় অনেক বড়। যা গাইতে প্রায় ৬ মিনিটের ও বেশি সময় লাগতে পারে। উরুগুয়ে আমাদের এই পৃথিবীর ইতিহাসে এমন একটি দেশ যে, যে দেশ টির খাবার তালিকায় প্রথম স্থান দখন করে রয়েছে স্যান্ডুইচ। উরুগুয়ের প্রায় সবারই প্রিয় খাবার এই স্যান্ডুইচ।
- Advertisements -
উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট জোজ মজিকা
২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত উরুগুয়ের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোজ মজিকাকে আমাদের এই পৃথিবীর ইতিহাসে বিশ্বের সব চাইতে গরীব প্রেসিডেন্ট হিসেবে বলা হয়ে থাকে। উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তিনি যে টাকা বেতন পেতেন, সেই বেতনের পুরো টাকা গুলো তিনি কোন এক দাতা সংস্থা (Charitable Fund) – কে দান করে দিতেন। এই জোজ মজিকা এক জন দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়া সত্বেও, সরকারী কোন বাড়িতে বসবাস না করে, তার ছোট্ট একটি ভাঙ্গা চুড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। তিনি কোন বিলাস বহুল জীবন যাপন করেন নি। যা আমাদের এই বিশ্বের ইতিহাসে একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অন্যতম একজন মাইল ফলক হয়ে রয়েছেন।
১৯৮৫ সালের দিকে উরুগুয়েতে মুলত সামরিক আইন জারি করা হয়। এবং এর কিছু দিন পরেই সেখানে গণতান্ত্রিক ভাবে ভোট বা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা হয়। এই উরুগুয়ে দেশ টি মুলত একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। এই দেশ টি পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যান্য ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ গুলোর থেকেও অনেক বেশি আলাদা। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় যে, এই উরুগুয়ে দেশে রাষ্ট্রের সাথে ধর্মের কোন রকম মিল বা সম্পর্ক নেই। উরুগুয়ে দেশ টিতে মুলত বেশির ভাগ মানুষই খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী বা আধিবাসী হয়ে থাকে। কিন্তু এর পরেও এখানে বড় দিন বা ক্রিস্টমাস ডে (Christmas Day) এর উপলক্ষ্য হিসেবে কোন রকম ছুটি দেয়া হয় না। এই বড় দিন টিতে এখানে ফ্যামিলি ডে বা পারিবারিক দিবস হিসেবে ছুটি দেয়া হয়ে থাকে!
- Advertisements -
বাচ্চা দের হাতে ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেট সংযোগ
উরুগুয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে এমন একটি দেশ, যে দেশ টিতে ২০০৯ সালে সমস্ত স্কুলের বাচ্চা দের হাতে ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেট সংযোগ তুলে দেয়া হয়। এই উরুগুয়ে দেশ টিতে গাভীর সংখ্যা এই দেশের মোট জন সংখ্যার চাইতে প্রায় তিন গুণ বেশি হয়ে থাকবে। এবং এই গাভী গুলোর উপর সব সময় কড়া নজর দারী করা হয়ে থাকে। এই উরুগুয়ে দেশ টি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাংস ও দুধ রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে।যা তাদের দেশীয় অর্থনিতীতে ব্যাপক হারে প্রভাব বিস্তার করেছে। উরুগুয়ে দেশটি দক্ষিন আমেরিকার এমন একটি দেশ, যে দেশ টিতে প্রথম সমকা’মী বিয়ে করাকে বৈধতা প্রদান করেছিল। অর্থ্যাৎ, আপনি চাইলে যাকে খুশি বিয়ে করতে পারবেন।
উরুগুয়ে দেশ টিতে আপনি ধুম”পা’ন বা সিগারে’ট খেতে পারবেন না। কারণ এখানে সিগারে”ট খাওয়া একদম নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। একই সাথে সরকার এই দেশ টিতে সিগা’রে’ট কে ব্যান করে দিয়েছে। এই উরুগুয়ে দেশ পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র দেশ, যারা সর্ব প্রথম বার ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ (Fifa World Cup) – এর আয়োজন করে। এবং একই সাথে তারা সেই বারেই সেই ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ জিতে নিয়েছিল।
উরুগুয়ের মানুষের ইঙ্কাম বা আয়
উরুগুয়ের প্রতি টি মানুষের ইঙ্কাম বা আয় আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারত বা পাকিস্তানের চাইতে অনেক অনেক বেশি। এর ফলে, এই দেশের মানুষের জীবন যাপন অনেক টাই বিলাস বহুল ধরনের হয়ে থাকে। আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, উরুগুয়ে দক্ষিন আমেরিকার এমন দেশ, যেই দেশ টিতে দূর্নীতির পরিমান বলতে গেলে শুন্য মানের বা ০% বলা যায়। এই উরুগুইয়ে দেশ টি প্রতি বছর যে পরিমান অর্থ ইঙ্কাম বা আয় করে থাকে, তার বেশির ভাগই আসে মূলত ট্যুরিজম বা ভ্রমণ কারীদের কাছ থেকে। তাহলে এখান থেকেই বুঝে নিতে হবে যে, উরুগুয়ে দেশ টি কত টা সৌন্দর্য্যে ভরপুর এবং সুন্দর তম দেশ।
মন্টেভিদিও (Montevideo) হল উরুগুয়ে দেশ টির রাজধানী এবং সব চাইতে বড় শহর টির নাম। এই উরুগুয়ে দেশ টিতে মুলত প্রায় ৩৫ লক্ষের ও বেশি মানুষ বসবাস করে থাকে। এবং এখান কার বেশির ভাগ মানুষই মূলত স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলতে পারে। সাধারনত উরুগুয়ে দেশ টির প্রচলিত মুদ্রার নাম কে উরুগুয়ান পেসো (Uruguayan peso) বলা হয়ে থাকে। উরুগুয়ে দেশ টির কৃষ্টি কালচার এবং সংস্কৃতি অন্যান্য দেশের তুলনায় অত্যান্ত মডার্ন এবং জাক জমক পুর্ণ হয়ে থাকে। এই দেশ টির প্রায় ৫৮% মানুষই মুলত খ্রিস্টান ধর্মের অধিবাসী হয়ে থাকে। এবং বাকি ৪২% মানুষ গুলো কোন ধর্ম কেই বিশ্বাস করে না।
- Advertisements -