আমাদের ইউনিভার্স এর সব থেকে মূল্যবান বস্তু কি দেখুন

আমাদের ইউনিভার্স এর সব থেকে মূল্যবান বস্তু কি

আমাদের ইউনিভার্সের প্রতিটি পদার্থই শুধুমাত্র মানবজাতির সৃষ্টিতে নয় আমাদের এই ইউনিভার্সের নির্মাণে সব চেয়ে বেশি গুরুত্বপু্র্ন ভুমিকা পালন করেছে। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে যা কিছু কোন স্থান বা আয়তন দখল করে এবং ভর ও মহাকর্ষের ধর্ম প্রদর্শন করে তাকেই পদার্থ বলা হয়ে থাকে।

পদার্থ এর ইংরেজি শব্দ হল ম্যাটার (Matter)। এই পদার্থ মানে মেটার দ্বারাই তৈরী আমাদের চারপাশের সব কিছু। এমনকি আমরাও এই পদার্থ দিয়ে তৈরি। আমাদের পৃথিবীর সব জিনিস বা সব বস্তু এই মেটার দিয়ে তৈরি হলেও মেটারের প্রকারভেদে এই সমস্ত বস্তুর মূল্য বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। যখনই আমরা মূল্যবান কোন বস্তু বা জিনিসের কথা বলে থাকি তখনই সর্ব প্রথম আমাদের মনে আসে সোনা বা গোল্ডের কথা। গোল্ড সত্যিই একটি মূল্যবান বস্তু এবং অনেক দেশে রাজস্বের ও এটি একটি অংশ। সারা পৃথিবীই এই বস্তুটির জন্য পাগল। আপনি যাকেই বলুন না কেন যে, পৃথিবীর সব থেকে মূল্যবান বস্তু কি? তাহলে এর উত্তরে অনেকেই এই গোল্ডের নামটি নেবে। কিন্তু আপনি কি জানেন আমাদের ইউনিভার্সে এমন অনেক বস্তু রয়েছে যার মূল্য গোল্ড এর থেকে হাজারও লাখো গুন বেশি মুল্যবান।

যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনারই জন্য। আজকের এই পোস্টে সর্ব শেষ যে বস্তুটি সম্পর্কে বলব, সে বস্তুটির মূল্য এতটাই বেশি যে পৃথিবীর বড় বড় কয়েকটা দেশ মিলেও এই বস্তুটি কিনতে পারবে না।

কো’কেন (Coc’aine) :

এটি একটি নিষিদ্ধ জনপ্রিয় ড্রাগস। এই মাদকের সব থেকে বেশি ব্যবহার উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে হয়ে থাকে। উন্নত বিশ্বের এক থেকে দুই শতাংশ মানুষ জীবনের নানা পরিস্থীতিতে কো’কেন সেবন করে থাকেন। কিন্তু এই নে’শা মোটেও সস্তা নয়। এক গ্রাম কোকেন এর মূল্য ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। মানে দশ গ্রাম কোকেন এর মূল্য ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। যা দশ গ্রাম গোল্ডের মুল্যের থেকে অনেক অনেক বেশি।

হেরো’ইন (Hero’in)

এটি এক প্রকার ব্যথানাশক ঔষধ হলেও, এটাকে মা’দক দ্রব্য হিসেবে বেশি ব্যাভার করা হয়। এই নে’শা শুধুমাত্র শরীর নয়, এই নেশা মানুষের মধ্যে জিনগত সমস্যারও সৃষ্টি করে থাকে। এই বিষাক্ত মাদ’কের এক গ্রামের দাম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। যদি গোল্ড এর সাথে এটার তুলনা করা হয়, তাহলে গোল্ডের তুলনায় এর মূল্য ৩ গুণ অধিক হবে।

প্লাটিনাম (Platinum)

বর্তমান সময়ে প্রত্যেকেরই প্লাটিনাম প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে। এটি সবথেকে জনপ্রিয় একটি ধাতব পদার্থ। এটা অতি মূল্যবান। তাই বর্তমান সময়ে প্লাটিনাম কেনা সবার পক্ষে মোটেও সম্ভব নয়। প্লাটিনাম বিভিন্ন ধাতব পদার্থের মধ্যে কঠিন, আশ ও তরল আকারে থাকে। এই প্লাটিনাম ক্যান্সারের ঔষধ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যার ফলে ঐ সমস্ত ঔষধের মূল্য অনেক গুন বেড়ে যায়। আর আপনি জেনে অবাক হবেন যে, মাত্র ১ গ্রাম প্লাটিনাম এর মূল্য ৩৫ হাজার টাকা। যা গোল্ড এর মূল্যের তুলনায় অনেক অনেক গুণ বেশি।

রোডিয়াম (Rhodium):

এই রোডিয়াম হল প্লাটিনামের ফ্যামিলির একজন সদস্য। এই রোডিয়াম অধিকাংশ সময়েই লাক্সারি গাড়ির ইঞ্জিন তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা ইঞ্জিনকে কার্বনের হাত থেকে রক্ষা করে। মূলত এই পদার্থ ব্যবহার করার ফলে গাড়ির মূল্য অনেকটা বেড়ে যায়। আর মাত্র এক গ্রাম রেডিয়াম এর মূল্য ৫৫ হাজার টাকার ও বেশি।

প্লুটোনিয়াম (Plutonium):

যে কোনো প্রকারের পরমাণু হাতিয়ার তৈরিতে ও ব্যবহার করতে সব চেয়ে প্রয়োজনীয় পদার্থ হল এই প্লুটোনিয়াম। এটি একটি তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক উপাদান। এর প্রতিক হল PU. এবং পারমানবিক সংখ্যা হল ৯৪। ভাবুন, পৃথিবীর সমস্ত বিজ্ঞানীরা যে পদার্থটির পিছনে লেগে আছে সেই পদার্থটির মূল্য কত হতে পারে। মাত্র ১ গ্রাম গ্রাম প্লুটোনিয়ামের মূল্য প্রায় তিন লক্ষ টাকা। যা সাধারণ দেখুন গোল্ড এর মূল্যের থেকেও ১০০ গুণ বেশি মূল্যবান।

ডায়মন্ড (Diamond):

এটার সম্পর্কে তো আমরা সবাই কম বেশি জানি। সোনার থেকেও অধিক জনপ্রিয় হচ্ছে ডায়মন্ড। আর এই পাথরের এক গ্রামের মূল্য ৮ লাখ টাকার থেকেও বেশি। এটাকে ক্যারেট হিসেবে বিক্রি করা হয়। এই হিসেবে ১ ক্যারেট = ০.২ গ্রাম।

ট্রাইটিয়াম (Tritium):

এটা একটি রেডিও একটিভ পদার্থ। যা বড় বড় থিয়েটার, স্কু্‌ল, হসপিটাল আর অফিসে এক্সিট (Exit) সাইন তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই পদার্থের সবথেকে ভালো দিক হল, এটা সব সময় উজ্জ্বল সবুজ আলো নির্গমন করতে থাকে। এই মূল্যবান বস্তুটির এক গ্রামের মূল্য প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকারও বেশি হয়ে থাকে। যেটা সোনার মূল্যের থেকেও  ৯০০ গুণ অধিক মূল্যবান।

হাফনিয়াম এন্ড ট্যান্‌টলাম আইসোমার্স (Hafnium & Tantalum Isomers)

পরমাণুর রিয়েক্টর কে ঠান্ডা রাখার জন্য, এই দুটি পদার্থের উপরই বিজ্ঞানীরা সবথেকে বেশি অর্থের ব্যবহার করে থাকেন। এটার এক গ্রামের মূল্য আপনাকে অবাক করে দেবে। এটার এক গ্রামের মূল্য ১ বিলিয়ন ডলার এর থেকেও বেশি। যা ভেবে দেখুন স্বর্ণের থেকে কত হাজার গুন বেশি মুল্যবান।

অ্যান্টিম্যাটার (Antimatter):

এটা একটি অতি মূল্যবান পদার্থ। এটাকে নিয়ে অনেক দেশের বিজ্ঞানীরাই অধ্যায়ন করে যাচ্ছেন। এই পদার্থ সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে যদি এটা পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়, তাহলে ভবিষ্যতে জ্বালানি সমস্যার সমাধান এবং স্পেস ট্রাভেল ভীষণ সহজ ও সহজ লভ্য হয়ে যাবে। এই অ্যান্টিম্যাটারের সাহায্যেি দ্রুতগতি সম্পন্ন স্পেসশিপ তৈরি করা সম্ভব হবে। যা আলোর গতিতে ছুটতে না পারলেও, আলোর গতির কাছাকাছি গতিতে ট্রাভেল করতে পারবে। এটা এতটা বেশি মূল্যবান একটি পদার্থ হলেও, সম্পূর্ণ পৃথিবীতে কারো কাছে ১ গ্রাম অ্যান্টিম্যাটার ও নেই। নাসার বিজ্ঞানীদের অনুসারে কল্পনা করা হয়, এই পদার্থের মাত্র ১ গ্রামের মূল্য ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলারের থেকেও অধিক হতে পারে। এটার মূল্য এতটাই বেশি যে পৃথিবীর বড় বড় দেশ মিলেও এটাকে কিনতে সক্ষম হবে না।

You might also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More