দাবা খেলতে চান?? ঝটপট জেনে নিন ট্রিক্সগুলো-

দাবা খেলার ট্রিক্স গুলো জেনে নিন।

দাবা খেলা। চরম বুদ্ধিমত্তার একটি খেলা। এই খেলা বুঝতে হলে আপনাকে অনেক মনোযোগী হতে হবে। কারণ এটি একটি বুদ্ধির খেলা। আপনি একদিনে খুব ভালো দাবারু হয়ে উঠবেন না। আপনার দাবা খেলায় ভালো হয়ে  ওঠার জন্য প্রচুর ধৈর্যের দরকার। শুধু তাই নয় সেই সাথে দরকার আপনার বুদ্ধি প্রয়োগ।

দাবা আমাদের উপমহাদেশের একটি জনপ্রিয় খেলা। কিন্তু আমরা অনেকেই দাবা খেলা সম্পর্কে অজ্ঞ। তাই আমরা ভালোভাবে দাবা খেলতে পারি না। আজকে আপনাদের সামনে আমি উপস্থিত হয়েছি দাবা খেলার কিছু আকর্ষণীয় ট্রিক্স সম্পর্কে যেগুলো আপনি রপ্ত করতে পারলে অতি শীঘ্রই হয়ে যাবে একজন প্রতিযোগী দাবাড়ু।

প্রথমত দাবা খেলতে হবে অনেক অনেক ম্যাচ। এর কোনো বিকল্প নেই। রক্ত-মাংসের মানুষের সঙ্গে যেমন খেলতে হবে, তেমনি খেলতে হবে কম্কিউটারের বিপক্ষেও। মানুষের সঙ্গে খেলার জন্য কোনো বন্ধুকে সঙ্গে নেওয়া যেতে পারে। সম্ভব হলে কোনো দাবা ক্লাবে যুক্ত হয়ে যাওয়া হবে ভালো বুদ্ধিমানের কাজ।

বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন নিয়মিত নানা টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। বিভিন্ন লেভেলের জন্য। সেগুলোতে খেলা শুরু করা উচিত নিজের লেভেল বুঝে। এর বাইরে বিভিন্ন জায়গায় হয় স্থানীয় টুর্নামেন্ট, যদিও এখন এর সংখ্যা খুব কমে গেছে। ওই টুর্নামেন্টগুলোতে অংশ নিতে হবে নিয়মিত। খেলতে হবে নিয়মিত।

এখন বেশ সুবিধা হয়েছে। সবার হাতে এসেছে স্মার্টফোন। কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে খেলতে হবে দাবা। আমার প্রিয় চেসবেজ (chessbase.com)। এখানে প্রায় ৫০ লাখের বেশি খেলার ডেটাবেজ রয়েছে। কম্পিউটার ও স্মার্টফোন দুই জায়গায়ই এটি ফ্রি ডাউনলোড করে নেওয়া যায়।

ওই ওয়েবসাইটে গেলেই পাবেন। আর খেলার জন্য চেজবেজেরই ইঞ্জিন playchess.com। এটাও ডাউনলোড করে নেওয়া যায়। এরপর আপনি খেলতে পারবেন কম্পিউটারের সঙ্গে। অফলাইনে বসেও। আর অনলাইনে গেলে পাবেন নানা লেভেলের খেলোয়াড়। তাদের সঙ্গেও খেলতে পারবেন।

আমার পরামর্শ, এই সফটওয়্যার দুটি কম্পিউটারের অথবা স্মার্টফোনে নামিয়ে এর প্রতিটি ফিচারের সঙ্গে পরিচিত হোন। স্মার্টফোনের জন্য পাওয়া যায় প্লে ম্যাগনাস* নামের একটা অ্যাপ। এটিতে আপনি বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসনের বিভিন্ন বয়সের অনুরূপ ইঞ্জিনের সঙ্গে খেলতে পারবেন।

দাবা খেলাকে অনেকে যুদ্ধের মতো চিন্তা করেন। এখানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ আছে, ট্যাকটিক্স এবং স্ট্র্যাটেজি। ট্যাকটিক্স হলো ছোট পরিকল্পনা, দু-একটা চালের পরিকল্পনা। স্ট্র্যাটেজি হলো দীর্ঘ বা অনেকগুলো চালের পরিকল্পনা। বহু বছরের দাবা খেলার মাধ্যমে অনেক ট্যাকটিক্স ও স্ট্র্যাটেজি গড়ে উঠেছে, সেগুলো বইয়ে-ইন্টারনেটে পাওয়া যাবে, এগুলো আস্তে আস্তে শিখে নিতে হবে।

দাবার গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার, খেলার ওপেনিং। নানা ধরনের ওপেনিং আছে। সাদা নিয়ে খেললে এক ধরনের, কালো নিয়ে খেললে এক ধরনের। সেগুলোও শিখতে হবে। আমার পছন্দের ওপেনিংগুলোর মধ্যে আছে ইংলিশ ওপেনিং, সিসিলিয়ান ডিফেন্স, কুইন্স পন ওপেনিং।

ওপেনিং শিখতে হবে, খেলা শেষ করা শিখতে হবে। আর শিখতে হবে গেম ডেভেলপমেন্ট। একটা ছোট্ট স্ট্র্যাটেজি বলি, ফুটবলের মতো দাবায়ও মধ্য মাঠ খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাঝের চারটি ঘর দখলে রাখা খেলায় এগিয়ে থাকার ভালো একটা স্ট্র্যাটেজি।

শেষ যে কাজটা করতে হবে, অন্যের খেলা দেখতে হবে। সরাসরি উপস্থিত থেকে যেমন দেখা যেতে পারে, অনলাইনেও দেখা যেতে পারে। তেমনি দেখতে হবে পড়েও। বড়-ছোট সব ধরনের খেলোয়াড়ের খেলা অনলাইনে পাওয়া যায়, চেসবেজেই আছে ৫০ লাখের বেশি। সেগুলো থেকে বিভিন্ন খেলার চালগুলো দেখতে হবে।

তাহলেও শেখা যাবে অনেক কিছু। খেলাগুলো নিয়ে বড় বড় দাবাড়ুরা কমেন্ট্রি দেন, সেগুলোও শুনতে হবে বা পড়তে হবে। বিখ্যাত ম্যাচগুলোর প্রতিটি চালের বিশ্লেষণ পাওয়া যায়, তা-ও পড়তে হবে নিয়মিত। সবশেষে, খেলতে হবে অনেক, পড়তে হবে অনেক, সময় দিতে হবে নিয়মিত। নিজের একটা লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। ছুটতে হবে সে লক্ষ্যের পেছনে। তবেই হওয়া যাবে ভালো দাবাড়ু।

You might also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More