দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমায় বোমা হামলার কাহিনী বিশ্লেষণ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমায় বোমা হামলার কাহিনী বিশ্লেষণ

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমরা তদন্ত টিম প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি আপনাদের নতুন নতুন কিছু অজানা তথ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য। তারই প্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত টিম আজকে আলোচনা করব আরও কিছু  অজানা বিষয় নিয়ে। যা আপনাকে জ্ঞ্যানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করবে।

১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট পৃথিবীতে ঘটে গেল নির্মম এক ইতিহাস। বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানুষের ওপর ফেলা হয় পারমাণবিক বোমা। পারমাণবিক বোমার ভয়াবহতা ছিল অত্যন্ত্ত ভয়ঙ্কর। জাপানের হিরোশিমা শহরে সকাল সাড়ে ৮টায় যখন বোমারু বিমান থেকে ‘লিটল বয়’ নামের পারমাণবিক বোমাটি ফেলা হয় তখন মুহূর্তেই লন্ডভন্ড্ড হয়ে জাপানের হিরোশিমা নামের গোটা শহর।

ঘরবাড়ি, পথঘাট নিমিষে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এর তিনদিন পর দ্বিতীয় পারমাণবিক বোমা ‘ফ্যাটম্যান’ পড়ে জাপানের আরেক শহর নাগাসাকির ওপর। আবারো পুনরাবৃত্তির ঘটে এক বিভীষিকাময় মৃত্যুর আহাজারি। আগুনের গন্ধ মৃত্যু লাশ মৃত্যু ঘটানোর বেদনার আর্তনাদ । দুটি বোমার আঘাতে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায়। জাপান বাধ্য হয় আত্মসমর্পণ করতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।

পারমাণবিক বোমা হামলার বিপক্ষে সারা পৃথিবীর মানুষ সোচ্চার হয়ে উঠলে এখনো এ নিয়ে তর্ক রয়েছে আমেরিকা কেন পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় কলঙ্ক হয়ে রয়েছে। সেখানে কলঙ্কের তিলকটি যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এ দুটি পারমাণবিক বোমা। কৌতূহলের বিষয়, আমেরিকা কেন এই হামলা করেছিল।

এ নিয়ে বিশ্লেষকদের ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। প্রথমেই বলা হয়, যে কোনো মূল্যে যুদ্ধ জয়। দ্বিতীয়ত, বিশ্বযুদ্ধের পরিসর ও বিস্তৃতি এতটাই বিশাল ছিল যে, সেখানে যুদ্ধের পরিধি সারা বিশ্বই। প্রতিটি রাষ্ট্রই এ যুদ্ধে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিল। রাজনীতি, অর্থনীতি চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল। এই যুদ্ধ থামানোর বিকল্প কোনো উপায়ও ছিল না।

কোনোভাবেই একপক্ষকে পরাজিত করা সম্ভব নয় বলেই এমন একটি নির্মম পথ বেছে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। অল্প সময়ে নিজেদের বড় কোনো ক্ষতি ছাড়াই বিশ্বযুদ্ধে নিরঙ্কুশ বিজয়ের বিকল্প কোনো উপায় না পেয়ে পারমাণবিক বোমা হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আমেরিকা। পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল, পারমাণবিক বোমার ভয়াবহতা পৃথিবীকে দেখিয়ে দেওয়া। পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের সুদূরপ্রসারী প্রভাব কিন্তু এখনো রয়ে গেছে।

যে কারণে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোকে আলাদা মর্যাদায় দেখা হয়ে থাকে। সেনাবাহিনীর শক্তি ছাড়াও এমন একটি অস্ত্র আমেরিকা বেছে নেয় যা শতাব্দীর পর শতাব্দী প্রতিপক্ষকে ভয়ে কাবু করে রাখবে। আরেকটি কারণ হিসেবে বলা হয়, আমেরিকা চেয়েছিল এমন বড় আকারের আঘাত করতে, যাতে প্রতিপক্ষ শুধু নিশ্চিহ্নই হবে না আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হবে।

প্রতিপক্ষকে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বিশ্ব্বযুদ্ধ জয়ের পথ খুঁজে পেতেই এই অমানবিক ও কলঙ্কজনক পথ বেছে নিয়েছিল আমেরিকা।

একটি পারমাণবিক বোমার শক্তি মাত্রা এতটাই ছিল যে। এখনো হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে এর প্রভাব বিদ্যমান রয়েছে যার। ফলে ওই স্থানের সন্তানরা এখনো প্রায়ই বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মায়।

You might also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More