বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ানক পাঁচ টি ভূতের বাড়ি সম্পর্কে জেনে নিন
বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ানক পাঁচ টি ভূতের বাড়ি
বিশ্বের পাঁচ টি ভূতের বাড়ি সম্পর্কে জেনে নিন
আমাদের চারপাশে এমন কিছু বাড়ি-ঘর রয়েছে যা দেখলেই অনেকটা ভূতের বাড়ি মনে হয়। বাড়ি-ঘরগুলো হয়তো অনেক দিন আগের, কোন রাজা বাদশাদের মরে যাওয়া সৌন্দর্য মন্ডিত প্রাসাদ ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে অবহেলায় অযত্নে বাড়ি গুলো হয়ে গেছে এক একটা ভূতের আবাসস্থল। সেগুলো দেখলেই শরীর আঁতকে উঠে। কিন্তু আপনি শুনলে অবাক হয়ে যাবেন যে, এই বাড়ি গুলো ছিল এক সময়কার অনেক সৌন্দর্য পূর্ণ ভবন। কিন্তু যত্নের অভাবে সেই বাড়িগুলো এখন আমরা মনে করি ভুতের আবাসস্থল। এই বাড়ি গুলো হলো, ভানগড় কেল্লা , ৫০ বার্কলে স্কয়ার , বোর্গভ্যাটনেট কটেজ , মন্টে ক্রিস্টো ও হোয়াইট হাউস যা ভুতের বাড়ি নামে পরিচিত। চলুন জেনে নেয়া যাক এই পাঁচ টি বাড়ি সম্পর্কে যা আমাদের মাঝে ভূতের বাড়ি নামে পরিচিত হয়ে আসছে।
ভূতের বাড়ি ভানগড় কেল্লা :
ভারতের ভানগড় কেল্লা কে বলা হয় এশিয়ার ভূতের বাড়ি। স্থানীয় লোকজনরা বলেন, রাতের অন্ধকারে সেখানে গেলে কেউ ফিরে আসে না! ভানগড় কেল্লা তৈরি করেছিলেন রাজা মাধো সিং। কেল্লা তৈরির আগে এখানে সাধনা করতেন গুরু বালুনাথ। সাধুর কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই ভানগড় কেল্লা তৈরি করেছিলেন মাধো সিং।
প্রচলিত আছে, বালুনাথ বলে গিয়েছিলেন, ‘তোমার কেল্লা যদি কখনো আমার সমাধির ওপর ছায়া ফেলে, তখনই তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে।’ কিন্তু মাধো সিং এত উঁচু করে ভানগড় কেল্লা বানিয়েছিলেন, এক সময় এটি বালুনাথের সমাধির ওপর ছায়া ফেলতে শুরু করে। সে সময়ই ভানগড় কেল্লার ছাদ ধ্বসে পড়েছিল। এখনো নাকি ওই এলাকায় কোনো বাড়ি তৈরি করলেই ছাদ ধ্বসে পড়ে।
ভারতের সরকার পর্যটকদের এই কেল্লায় যেতে নিরুৎসাহিত করে। অন্ধকারে কেল্লার ভেতরে ঢোকা একদম নিষেধ। পর্যটকেরাও বলেন, ভানগড় কেল্লা এর ভেতরে ঢুকলেই কেমন যেন একটা মানসিক চাপ বোধ হয়। একটা অস্বস্তিকর অনুভূতি ঘিরে ধরে!
ভুতের বাড়ি ৫০ বার্কলে স্কয়ার :
এটিই ব্রিটেনের ভূতের বাড়ি। শুরুটা হয়েছিল ১৮৩০ সালে। সেবার ওপরতলার জানালা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছিল এক তরুণী। পরে এ বাড়িতে থাকতে শুরু করেন মিস্টার মেয়ার নামে এক লোক। তাঁর হবু বউ অন্য আরেক জনের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায় তিনি পাগল হয়ে গিয়েছিলেন। জীবনের বাকি সময় ৫০ বার্কলে স্কয়ারে রহস্যময় জীবন কাটিয়েছেন তিনি।
ভুতের বাড়ি বোর্গভ্যাটনেট এর কটেজ :
এই কটেজ টিকে ভূতের বাড়ি মনে করা হলেও, মজার একটি ব্যাপার হচ্ছে। এখানে এখনও একটি রেস্টুরেন্ট চালু রয়েছে। আর এই রেস্টুরেন্টে যদি কেউ এক রাত থাকতে পারে, তাহলে তাকে সাহসিকতার সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। চলুন জেনে নেই এই ভূতের বাড়ি সম্পর্কে বিস্তারিত।
বোর্গভ্যাটনেট উত্তর সুইডেনের একটা ছোট্ট গ্রাম। সেখানকার একটা কটেজে ঘটে অদ্ভুত সব ঘটনা। প্রথম ১৯২৭ সালে কটেজের বাসিন্দা নিলস হেডলান্ড দাবি করেন, এখানে অশরীরী শক্তি আছে। একটা অদৃশ্য শক্তি নাকি তার কাপড় ছিঁড়ে ফেলত। ১৯৩০ সালে সে বাড়িতে থাকতে শুরু করেন রুডলফ ট্যাংডেন নামে এক ধর্মযাজক।
একদিন হঠাৎই তাঁর ঘরে দেখেছিলেন ধূসর পোশাক পরা এক নারীকে। রুডলফ যখনই তাকে অনুসরণ করতে গেছেন, তখনই চোখের সামনে মিলিয়ে গিয়েছিল মানুষটা। বাড়ির এক অতিথি একবার মাঝরাতে ঘুম ভেঙে দেখেন, তিন নারী স্থির দৃষ্টিতে তাঁর দিকে তাকিয়ে। তড়িঘড়ি করে উঠে তিনি বাতি জ্বেলেছেন। তারপরও বেশ কিছুক্ষণ ছিল তিন নারীর অবয়ব।
ভূতের বাড়ি মন্টে ক্রিস্টো :
ব্যালকনিতে পায়ের শব্দ, অশরীরী মানুষের ডাক, নির্জন একটা বাড়ি মাঝে মাঝে ভুতুড়ে কিছু ঘটনা। আর এসবের মধ্যেই মন্টে ক্রিস্টো বাড়িতে রায়ান পরিবারের বসবাস। শুধু বসবাস, এই নয় তারা এই বাড়িতে রয়েছেন দীর্ঘ ৫০ বছর যাবৎ। ৫০ বছরের অভিজ্ঞতায় উঠে এসেছে নানা রকম ভুতুড়ে ঘটনা। জেনে নেয়া যাক এই বাড়িটি ভূতের বাড়ি হওয়ার রহস্য।
অস্ট্রেলিয়ার এ বাড়ির প্রথম মালিক ছিলেন ক্রিস্টোফার ও এলিজাবেথ ক্রলে। তাদের এক পরিচারিকা ব্যালকনি থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। বিছানায় আগুন ধরে মারা গিয়েছিল এ বাচ্চা ছেলে। একটা ছোট্ট মেয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছিল (অনেকে বলে ধাক্কা দিয়ে ফেলা হয়েছিল)। এসব কারণে বলা হয়, এটিই অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ভয়ানক ভূতের বাড়ি।
ভূতের বাড়ি হোয়াইট হাউস :
বিশ্বের সব থেকে ক্ষমতাধর দেশ আমেরিকা। আর সেই দেশের প্রেসিডেন্ট যে বাসায় থাকে সেই ভবনের নাম হোয়াইট হাউস। ভূতের বাড়ি তালিকায় এই ভবনের নাম দেখে চোখ কপালে উঠে গেছে আপনাদের। বিশ্বাস হচ্ছে না নিজের চোখকে। কেনই বা বিশ্বাস করবেন। প্রতি ৫ বছর পর পর নতুন নতুন প্রেসিডেন্টরা এই হোয়াইট হাউস থেকেই করে যাচ্ছেন বিশ্ব শাসন।
তাহলে এই বাড়িটি কেমনে ভূতের বাড়ি হয়? আসলে সত্যি কথা বলতে হোয়াইট হাউসে যারা ছিল তারা অনেকেই বলেছেন যে, এই বাড়িটি আসলেই ভূতের বাড়ি । আর তারা এই বাড়িটিতে একটা অশরীরী আত্মার সন্ধান পেয়েছিলেন মাঝে মাঝে। সেই আত্মাটা আর কারো নয় সেই আত্তাটি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফার্স্ট লেডি বলেছিলেন, তিনি জানালার বাইরে থেকে আব্রাহাম লিংকনের অশরীরী আত্মা দেখেছেন। আর তারপর থেকে যারা এসেছিলেন তারা কোন না কোন অলৌকিক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। তাই বলা হয় হোয়াইট হাউস একটি ভূতের বাড়ি ।
বন্ধুরা, হোয়াইট হাউজ সহ পাঁচ টি ভূতের বাড়ি সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যদি ভুতুড়ে বাড়ি সম্পর্কে আরো জানতে চান তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দেবেন। ধন্যবাদ