বৃদ্ধাশ্রমের কষ্ট

কবিতা: বৃদ্ধাশ্রমের কষ্ট

কবিতা: বৃদ্ধাশ্রমের কষ্ট
লেখা: Orpita oyshorjo

কেমন আছিস বাবা ?
ভালো আছিস তো ,মাকে আর মনে পড়ে না তাই না
মাকে ভুলে গেলি এভাবে রেখে গেলি মাকে বৃদ্ধাশ্রমে
জানিস বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে আমার আর ভালো লাগে না
বৃদ্ধাশ্রমের করিডোর আজ কাঁনায় কাঁনায় ভরপুর,
দুঃসহ যাতনা, ঘৃণা, চারদিকে শুধু কর্পূর।

আজ যে তুই হয়েছিস বড়, বাবা হয়ে গেছিস তাই না
তোর সন্তান নিশ্চয়ই তোকে বাবা বলে ডাকে
আমাকে তো ডাকিস না আর ‘মা’ বলে
বিলাসিতায় যে জড়সড় , খাচ্ছে তোকে কুঁড়ে কুঁড়ে
সেদিন যখন বললি তোর ঘরে আমি নাকি
বড্ড বেমানান,
আমার জন্য নাকি আজকাল তোর
কাঁদে না প্রাণ ।
আজ আমি কেমন আছি রাখিস না তার খবর ।

তোর ফ্ল্যাটের এককোণায় জায়গাটা হয়ে ওঠেনি আজো
আমি তোর কাছে অনেক বেশি বোঝা
এ কথা বলাটা তোর কাছে অনেক সোজা
যত্নে লালিত স্বপ্ন গুলো অযত্নে বিদায়ের শেষ ঠিকানা- এই বৃদ্ধাশ্রম ;
বৃদ্ধাশ্রমের করিডোরে আজ তীল ধারণের ঠাঁয় নাই,
আমার মত হাজার হাজার মা আজ সেখানে আশ্রয় চায়।

বৃদ্ধাশ্রমের একপাশেতে আমার জন্য জায়গা আছে যে রাখা,
শুনেছি ওখানেই আমার থাকার জায়গা নাকি পাকা!
এসব দেখতে দেখতে আমি বহুদিন নিজেকেই ভুলে যাচ্ছি
বিশ্বাস কর মনের ভেতর লুকানো একটা সুড়ঙ্গ দেখতে পাচ্ছি…
সে সুড়ঙ্গ দিয়ে ইচ্ছে করে পালিয়ে যাই
কেমন করে যে পালাই এটাই এখন ভাবছি।

তোর কথা আজ বড্ড মনে পরছে
আমার চোখ বেয়ে অশ্রু নামছে আবেগে অবিরত,
প্রতিটাক্ষণ থাকি অপেক্ষায় , যদি আসে আমার খোকা এই আশায়
একটিবার আয়রে কোলে সারাদিন মন শুধুই তোকে ডাকে ।
দূর হতে দেখে আমি ভাবছি এসেছে আমার খোকা,
আজও আমি রয়ে গেলাম কেমন যেন বোকা!!
চিঠিখানা দিয়েছিলাম সেই কবে পাঠাস নি তার জবাব,
কলমে কালি নেই নাকি কাগজের অভাব?

ঘন ঘন চিঠি লিখি, রাগ করিস কি তুই
নাকি যত্নে আমার লেখা চিঠিগুলো পুড়িয়ে করিস ছাই,
বাড়ছে বয়স, শরীরে নেই আর আগের মতো জোর-
বসে বসে ভাবছি কখন হবে সেই ভোর ,
কখন পাবো তোর দেখা ।

মনেও যেন তাগিদ পাই না আর,
মনটা কেমন যেন হয়ে গেছে ভার
সময় করে আসিস খোকা একটা দিন আমার কাছে
তোর কপালে একটা চুমু দিবো এঁকে , যত্নে রাখিস সেটা তুলে।
যত্ন নিস নিজের খোকা কাটুক দিন আরামে,
তোকে ছাড়া নেই ভালো এই বৃদ্ধাশ্রমে………!

 

 

You might also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More