বিয়ে করতে চাচ্ছেন? বিয়ের আগে জেনে নিন কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

যারা বিয়ে করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য বিয়ের আগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

আপনি বিয়ে করতে চাচ্ছেন? বিয়ের আগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস আছে তাকি আপনি জানেন? বিয়ে করার জন্য ভাল মেয়ে খোজা পরবর্তী জীবনে সুখ নিয়ে আসে। এছাড়া বিয়ের আগে অনেক বিষয় জানতে হয় এবং সে অবযায়ী কাজ করলে পরবর্তী জীবন খুব ভাল হয়। আমরা সবাই চাই বিয়ে করে সুখি জীবন যাপন করি। কিন্তু বিয়ের সময় করা কিছু ভুল আপনাকে সারাজীবন কষ্ট দিয়ে যাবে। তাই বিয়ের আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস জানা থাকলে পরবর্তী জীবন ও ভাল মেয়ে খুজে পাবেন।

বিয়ের আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

বিশেষ করে মেয়েরা বিয়ের আগে অনেক ভদ্র হয়ে যায় (কেউ কেউ সাময়িক বেশ ধারণ করে)। কেউ কেউ হঠাৎ করে পর্দা পালন করা শুরু করে। এমন অবস্থায় সেই মেয়েটি চারিত্রিকভাবে কেমন তা যাচাই করা অনেক কষ্টকর বিষয় হয়ে যায়, কারণ কেউ তো কারোর মনের ভিতরে ঢুকে বুঝতে পারার ক্ষমতা নাই। কিন্তু তারপরেও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে মোটামুটি কিছু বুঝা যায়। নিচে তার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস ও কিভাবে কি করবেন তা তুলে ধরা হল-

বিয়ের আগে গুরুত্বপূর্ণ টিপস – দেনহমোহর

বিয়ের আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপস হচ্ছে দেনমোহরের ফাঁদে না পড়া। বর্তমানে নারী ও পারিবারিক আইনে দেনমোহর পুরুষদের জন্য এক সর্বনাশা ফাঁদ। আজকাল অনেক মেয়ের পরিবার উচ্চ দেনমোহর দিয়ে বিয়ে দিয়ে ব্যাবসা শুরু করেছে। অথবা যাদের মেয়ে(পাত্রী) ঘাড় ত্যাড়া, অথবা যেসব পাত্রীর অভিভাবকরা জানে যে তাদের মেয়ের স্বভাব এতটাই খারাপ যে সহজেই তার স্বামী তাকে ছেড়ে দিতে পারে, তারা উচ্চ দেনমোহর ধার্য করে জামাইকে এক প্রকারে বেঁধে রাখে, কারণ তালাক হলেই(স্বামী বা স্ত্রী যেই দিক) স্বামীকে মোহরানা শোধ করতেই হবে। তাই যৌক্তিকভাবে যত কম দেনমোহর দিবেন এবং তা কাবিনের সময় পুরাটা উসুল করে দিবেন ততো ভবিষ্যতের জন্য আপনি কম ঝামেলায় জড়াবেন। কেউ কেউ আবার মিষ্টি কথার ফাঁদে ফেলতে চেষ্টা করবে। যেমন,

— আরে এই টাকা আমরা নিবো নাকি?
— এটা শুধু লিখে রাখা
— সমাজে স্টেটাস বাড়ানো
— আত্মীয়দের কাছে বলতে ভালো লাগবে
— তুমি এতো কম দেনমোহর দিলে লোকে তোমাকে ছোটোলোক’ বলবে
— পাত্রীর বড় বোনের দেনমোহর এর চাইতেও বেশি ছিল সুতরাং এই বিয়ার মোহরানা বড় বোনের চাইতে বেশি অথবা অন্তত সমান করতেই হবে ইত্যাদি।

এক্ষেত্রে আপনিও একটা কৌশল নিতে পারেন, আপনিও বলবেন, ঠিক আছে দেনমোহর আপনার যত খুশি লেখেন কিন্তু কাবিনে ১০০% উসুল লিখতে হবে। আর পাত্রী সমস্ত টাকা বুঝে পেয়েছে মর্মে “লিগাল স্টাম্পে” সই করে দিলেই আমার কোনো আপত্তি থাকবে না। এতে করে আমিও আমার ছোট যৌক্তিক দেনমোহর দিয়ে দিলাম আর আপনারাও আত্মীয়-সমাজে মুখ দেখাতে পারবেন। বিয়ে ভেঙে ভোগান্তিতে পড়ার চাইতে সেই বিয়ে না হওয়াই উত্তম।

বেশিরভাগ সময় নিজেরপক্ষের মুরুব্বীগণ আপনার বিপক্ষে যাবে। তারা তাদের জামানার মতো চিন্তা করে, কিন্তু বর্তমানের পরিস্থিতিতে তারা অনেক পিছিয়ে। তাদের মধ্যে আবার এইধরণের মানসিকতাও থাকে “পোলাপাইন আবার কি বুঝে/জানে”। কিন্তু দেনমোহরের মামলা স্বামীর নামে হবে, মুরুব্বীদের নামে না। তাই সব সংকোচ-শরম ঝেড়ে সম্মান দিয়ে হবু স্বামী নিজেই কথা বলবেন।

বিয়ের আগে গুরুত্বপূর্ণ টিপস – কাবিননামা

বিয়ের আগে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস হল নিয়ের কাবিন নামা। বিয়ের কাবিননামা রেজিস্ট্রেশনের সময়ে ১৮ নাম্বার পয়েন্টে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ক্ষমতায় টিক চিহ্ন দিবেন না। কারণ এটা ইসলাম/শরীয়ত সম্মত নয়। কুরআন-হাদিসের কোথাও স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অধিকার/ক্ষমতা দেয়া হয় নাই, কিন্তু স্ত্রী স্বামীর কাছে তালাক চাইতে পারে এবং অবশ্যই সেটা যৌক্তিক কারণে হতে হবে।

কাবিননামায় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হলে সে যেকোনো সময়ে সমগ্র বাংলাদেশের যেকোনো কাজী অফিস থেকে অতি সহজেই তালাকনামায় সই করে “এক তরফা তালাক” দিতে পারে। স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া না থাকলে এই ক্ষেত্রে স্ত্রীকে আগে “পারিবারিক আদালত” থেকে ডিক্রী নিতে হবে এরপর কাজীর মাধ্যমে তালাক দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে স্বামী চাইলে স্ত্রীর তালাককে আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে এবং স্ত্রী অযৌক্তিক বা মিথ্যা অজুহাতে তালাক দিয়ে থাকলে বেকায়দায় পড়বে, ইনশাল্লাহ।

সেই সাথে কাবিননামার ১৭ আর ১৯ নাম্বার পয়েন্টে কোনো শর্ত দেয়া থাকলে এবং “স্বামীর তালাক প্রদান ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে” লেখা থাকলে সেই কাবিননামায় সই করবেন না। বেশিরভাগ সময় কাজীরা স্বামীর অনুমতি না নিয়েই কাবিননামার ১৭, ১৮, এবং ১৯ নাম্বারের পয়েন্টগুলায় এই কাজ করে থাকে। অনেক সময়ে পাত্রীর এলাকার কাজীরা পাত্রীর পরিবারের সাথে যোগসাজোগে এই কাজ করে থাকে।

তাই অবশ্যই কাবিননামা পূরণ ও সই করার সময়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকবেন এবং সই করার পর তৎক্ষণাৎ সেই কাবিননামার লেখাগুলার স্পষ্ট ছবি তুলে রাখবেন যাতে করে পরে কোনো জালিয়াতি করতে না পারে। পরবর্তীতে নিকাহনামা/কাবিননামার “ডুপ্লিকেট কপি” কাজীর কাছ থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে নিজের কাছে যত্ন করে রাখবেন।

বিয়ের আগে গুরুত্বপূর্ণ টিপস মেয়ের বড়বোন

বিয়ের আগে গুরুত্বপূর্ণ টিপস গুলোর আর একটি হল মেয়ের বড় বোন কে কাজে লাগানো। যেসব মেয়ের বড় বোন আছে, এটাকে আপনার জন্যে আশীর্বাদ মনে করুন। আপনারা যদি পাত্রীর বড় বোনের খোঁজ নিয়ে তার চরিত্র, স্বভাব, মনমানসিকতা, স্বামীর সাথে কেমন আচরণ করে, তার শ্বশুর বাড়ির লোকদের সাথে কেমন আচরণ ব্যবহার করে, জামাইকে নিয়ে আলাদা হয়েছে কিনা ইত্যাদি বিষয়গুলা যাচাই করতে পারেন।

তাহলে মনে করবেন পাত্রীর পরিবারের কালচারের ব্যাপারে মোটামুটি ৯০% জানতে পারবে। বিয়ার পর আপনার বউকে তার বড় বোনরাই সাধারণত বিভিন্ন কলাকৌশল, ছলনা, শয়তানী বুদ্ধি ইত্যাদি দিয়ে থাকে।

বিয়ের আগে টিপস বন্ধু মহলে খোঁজ

বিয়ের আগে পাত্রীর বন্ধু মহলে খোঁজ নেয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি টিপস । পাত্রী না হয় খোলস পাল্টাইতে পারে, কিন্তু তার বন্ধুমহলের তো খোলস পাল্টাবে না। জ্বী, বর্তমানে এটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সব মেয়েরাই তাদের নিজ পরিবারে, সমাজে, আত্মীয়মহলের সামনে খারাপ-অনৈতিক কাজ করে না।

কিন্তু সে ঠিকই যাদের সাথে বন্ধুত্ব ও মেলামেশা করে সেখানে খোঁজ নিলে এবং তাদের বন্ধু-বান্ধবীরা কেমন এটা যাচাই করতে পারলেই আপনার পাত্রীকে যাচাই করতে পারবেন। কথায় আছে “রতনে রতন চিনে” , “চোরে চোরে মাসতুতো ভাই” , “সঙ্গদোষে লোহা ভাসে”।

বিয়ের আগে মেয়ের মা যাচাই

বিয়ের আগে মেয়ের মাকে সঠিকভাবে যাচাই করার চেষ্টা করবেন। এটি বিয়ে আগে করা একটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস । কেননা মা যেমন হবে তার মেয়েও তারই মতন হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নতা দেখা যায় তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে একই হয়।

—পরিবারে তার মায়ের ভূমিকা কেমন?
—সংসারের কতৃত্ব মায়ের হাতে কিনা?
—তাদের বাড়ি-সম্পত্তি মায়ের নামে কিনা?
—সংসারের কামাইগুলা পাত্রীর মায়ের কাছে যায় নাকি?
—হিসাব-নিকাশে নাক গলায় নাকি?

এইসব খবর জানার চেষ্টা করবেন। কারণ যেই মেয়ের মা দাজ্জাল টাইপের বিয়ার পর সেও তার কন্যাকে দাজ্জাল বানাবেই। পারলে তারা মেয়ের সংসার ভেঙে দিবে কিন্তু নিজে আর তার মেয়েকে নরম করবে না। এরা রাক্ষুসী মা। এইধরণের পরিবার থেকে হাজার মাইল দূরে থাকুন, প্রয়োজনে সারা জীবন রোজা রাখবেন আর মানব সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করে দিবেন কিন্তু এইসব মায়ের মেয়ে বিয়ে করে নিজে শেষ হবেন না।

বিদ্রঃ দাজ্জাল ও রাক্ষস উদাহরণ, কিছু মায়েরা মেয়ের ভালো করতে গিয়ে খারাপটাই বেশি করে যার ফলে দাজ্জাল ও রাক্ষসী মনোভাব ফুটে ওঠে।

বিয়ের আগে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ টিপস ভারতীয় সিরিয়াল

বিয়ে করার আগে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস হল ভারতীয় সিরিয়াল। বিয়ের আগে পাত্রী নিজে স্বীকার নাও করতে পারে তাই খুব কৌশলে জানার চেষ্টা করবেন সে নিজে এবং তার পরিবার বাসায় অবসরে “ভারতীয় সিরিয়ালের” ভক্ত কিনা? এটাতো বুঝতেই পারতেছেন সিরিয়াল ভক্ত মেয়েরা ভালো কিছু তো পারেই না, শুধু খারাপ দিকগুলিই শিখে।

বিয়ের আগে এই ৬ টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস অবলম্বন করতে পারলে ইনশাআল্লাহ আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন মেয়েটা কতটুকু আপনার যোগ্য। এই গুরুত্বপূর্ণ টিপস গুলো অনুসরণ করতে হবে বিয়ের আগে। বিয়ের আগে এই সব গুরুত্বপূর্ণ টিপস অনুসরণ করলে আপনি একটি ভাল মেয়ে পাবেন এবং পরবর্তি জীবন সুন্দর সুখে শান্তিতে কাটাতে পারবেন।

You might also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More