মাল্টিভার্স থিওরি কি? আপনার মত হুবহু কেউ আছে? বিস্তারিত জানুন

মাল্টিভার্স থিওরি কি? জানুন অজানা সব তথ্য

বর্তমান পৃথিবী এবং ইউনিভার্স সম্পর্কে আজ আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, তা সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের দ্বারা। বিজ্ঞানের কারণে মানুষের মনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুজে আজ আমরা আধুনিক থেকে আরও আধুনিক হয়েছি। বর্তমানে আমরা বিজ্ঞানের দিক থেকে অনেকটা উন্নতি করেছি।

মাল্টিভার্স থিওরি কি

কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানের এমন কিছু থিওরি আছে, যা আমাদেরকে খুবই অবাক করে দেয়। কিছু থিওরি ইউনিভার্সের বাস্তব হওয়াকে নিয়েই প্রশ্ন দাড় করে দেয়। আবার কিছু থিওরি এমনও আছে, যা বলে আমরা ব্ল্যাকহোলের ভিতরে আছি। কিন্তু কেমন হবে, যদি আমি আপনাদেরকে বলি, এই ইউনিভার্সে এমন একটি স্থান আছে, যেখানে আপনার মত দেখতে একজন মানুষ রয়েছে। যে মানুষটি দেখতে হুবহু আপনার মতই। তাহলে আপনি কি বিশ্বাস করবেন?? এমনটা কি সত্যিই হতে পারে? বিজ্ঞানের ভাষ্যমতে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। বিজ্ঞানীদের এই অসম্ভব মনে করার থিওরির নামই হল মাল্টিভার্স থিওরি।

বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে, আমাদের এই ইউনিভার্স ছাড়াও আরো অনেক ইউনিভার্স রয়েছে। যেখানে আমাদের প্রতিরূপ রয়েছে। কিন্তু আমরা ঐ ইউনিভার্সকে দেখতে পারবো না। কেননা হয়তোবা ঐ ইউনিভার্স আমাদের থেকে অনেক দূরে মজুদ রয়েছে। অথবা অন্য কোন ডায়মেনশনে রয়েছে। যার কারণে আমরা আমাদের প্রতিরূপ না পারব দেখতে আবার না পারব অনুভব করতে।

প্যারালাল ইউনিভার্স

যেহেতু মাল্টিভার্স থিওরি এর মতে আমাদের ইউনিভার্সের মতো আরও অনেক অগনিত ইউনিভার্স রয়েছে। এর জন্যই বিজ্ঞানীরা মনে করেন প্রতিটি সম্ভাবিত ঘটনা ঘটার কোন না কোন ইউনিভার্সে অবশ্যই সম্ভব। এর মানে হল, আপনি আপনার জীবনের প্রতিটি সম্ভব হতে পারা ঘটনার সাথে কোন না কোন ইউনিভার্সে অবশ্যই বসবাস করছেন। কিন্তু আপনি সেগুলো দেখতে পারবেন না। কারণ আপনি আপনার বাস্তব ইউনিভার্সে ঐ বিকল্পকেই বাস্তব বলে অনুভব করছেন। এই সব ইউনিভার্স কে সমান্তরাল ব্রম্মান্ড বা প্যারালাল ইউনিভার্স বলা হয়ে থাকে।

এখন আপনার হয়তো মনে হতে পারে যে, এটা একটি সাইন্টিফিক কল্পনা। অথবা কোন সাইন্স ফিকশন  মুভির কাহিনি হবে। কিন্তু এমনটি মোটেও নয়। বিজ্ঞানীরা এই ঘটনাটিকে নিয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন করার পর, এই থিওরিটি সবার সামনে এনেছেন। তারা বলেন যে, প্যারালাল ইউনিভার্স হতে পারে।

পদার্থ বিজ্ঞানী হিউজ এভরেট (Hugh Everett)

আমেরিকান পদার্থ বিজ্ঞানী হিউজ এভরেট। তিনি ১৯৫৪ সালে ম্যানি ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশন (Many World interpretation) কে সবার সামনে উপস্থিত করেন। এটার মোতাবেক, কোয়ান্টাম লেভেলে পরা ইফেক্ট ব্রম্মান্ডকে লাগাতার বিভাজিত করছে। এর মানে হচ্ছে, ঐ সব প্রতিটি জিনিস বা কর্ম, যেগুলো আপনি করেন, আপনার দ্বারা সম্পাদিত সেসব ক্রিয়া নতুন একটি ইউনিভার্স এর জন্ম দেয়। আর প্রতিটি ইউনিভার্সে আপনার করা সিদ্ধান্তের অনুসারে আলাদা আলাদা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। যার ফলে আলাদা আলাদা ফলাফল প্রকাশ হয়ে থাকে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, মনে করেন আপনি একটি গাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। কিছু দূর যাওয়ার পর দেখলেন রাস্তা টি দুইভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। আপনাকে আপনার গন্তব্যে পৌছাতে হয়তো ডান দিকে যেতে হবে। আর নয়তোবা বাম দিকে যেতে হবে। ঠিক এই রকম স্থানে, ইউনিভার্স আপনার সিদ্ধান্তের অনুসারে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। আর আপনি হয়তোবা ডান দিকে, আর নয়তোবা বাম দিকে গিয়ে থাকেন। এর মানে এইখানে, প্রতিটি সম্ভাবিত ঘটনাই ঘটবে কোন না কোন ইউনিভার্সে। কিন্তু আপনি এইটাকে অনুভব করতে পারবেন না। সেটা যে কোন ব্রম্মান্ডেই হোক না কেন।

পদার্থ বিজ্ঞানী হিউজ এভরেট, এটাকে নিয়ে কোয়ান্টাম লেভেলে গভীরভাবে অধ্যায়ন করার পর, এই সিদ্ধান্তকে সবার সামনে তুলে ধরেন। কিন্তু তার এই থিউরির সাথে সব বিজ্ঞানীরা একমত নয়।

প্রসিদ্ধ বিজ্ঞানী নীলস বোর (Neils Bohr)

প্রসিদ্ধ বিজ্ঞানী নীলস বোর। তিনি এটম এর বোর মডেলকে তৈরি করেছিলেন। তিনি এটা মনে করতেন না যে, আমাদের প্রতিটি নির্ণয় বা কর্ম থেকে ব্রম্মান্ড বিভাজিত হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্তকে না মানাও ঠিক হবে না। প্যারালাল ইউনিভার্স হতে পারে। এই ধারনা টি বিগ ব্যাং এর সময় করা হয়েছিল। যেখানে সিঙ্গুলা্রিটি থেকে একট মহা বিস্ফোরণ হয়। যার থেকে আমাদের এই থ্রি ডায়মেনশনাল ব্রম্মান্ডের জন্ম হয়েছে। যেহেতু অবজারভেবল ইউনিভার্স ঐ পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে, যেখান থেকে আলো আমাদের কাছে এসে পৌছেছে। এর মানে হল, ১৩.৮ বিলিয়ন লাইট ইয়ার পর্যন্ত।

এখানে আমরা এটা বলতে পারবোনা যে,  এর থেকেও আগে ব্রহ্মাণ্ড নেই। যেহেতু ব্রম্মাণ্ড আলোর থেকেও অধিক দ্রুত গতিতে এখনও পর্যন্ত বড় হচ্ছে, এর মানে হল ব্রহ্মাণ্ড আমাদের কল্পনার থেকেও অনেকটাই বিশাল। হতে পারে আমাদের ইউনিভার্স এর পরে যেসমস্ত ব্রহ্মাণ্ড আছে, তা আমাদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সব গুলোই আমাদের ইউনিভার্স থেকে অনেক বিশাল।এবং এটাও হতে পারে ঐ সকল ব্রহ্মাণ্ডে ভৌতিক নিয়ম সম্পূর্ণ আলাদা। অথবা আমাদের মতই সব কিছু এক রকমের হতে পারে।

মাল্টিভার্সের মধ্যে ইউনিভার্স এর অবস্থান

বিজ্ঞানীদের মতে, মাল্টিভার্সের মধ্যে ইউনিভার্স গুলো পাশাপাশি অবস্থান করে থাকে। আর এই রকম অগনিত ইউনিভার্স হতে পারে। কিছু বিজ্ঞানী এটাও মনে করেন যে আমাদের ব্রহ্মাণ্ড অনন্ত। আর যেখানে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব এর পর সবকিছুই নিজেকে রিপিট করে। এর মানে ইউনিভার্সে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব এর পর আমরা আমাদের প্রতিরূপ, সৌরমন্ডল, পৃথিবী এমনকি আমাদের মত দেখতে হুবহু এক রকম মানুষকে খুজে পাব।

কিন্তু যাইহোক, আমরা মাল্টিভার্স থিওরি কে সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ করতে পারব না। আর না এইটাকে ভুল প্রমাণিত করতে পারব। কিন্তু সত্যি যদি মাল্টিভার্স থেকে থাকে, তাহলে আপনার হাজারও প্রতিরূপ হাজারও ইউনিভার্সে অবশ্যই মজুদ আছে। এবং তারা আপনার নেওয়া আলাদা আলাদা নির্ণয়কে অনুসরণ করেই জীবন যাপন করছে। অপরদিকে এমনটাও হতে পারে যে, অন্য কোন প্রতিরূপের নির্ণয় হিসেবে আপনি আপনার এই বাস্তব জীবন কাটাচ্ছেন। যেমন মনে করুন, আপনি এই ব্রহ্মাণ্ডে একজন গায়ক। কিন্তু অন্য কোন ব্রহ্মাণ্ডে আপনি একজন ফুটবল খেলোয়াড়। আবার অন্য আর একটি ব্রহ্মাণ্ডে, আপনি হয়তোবা একজন বিজ্ঞানী হিসেবে রয়েছেন।

প্যারালাল থিওরির আইডিয়া

যদি মাল্টিভার্স থিওরি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে আপনার দ্বারা করা প্রতিটি ক্রিয়া শুধু মাত্র আপনার উপরেই নয়, আপনার প্রতিটি প্রতিরূপ এর উপরেও প্রভাব ফেলবে। প্যারালাল থিওরির আইডিয়া স্টিং থিওরি থেকে এসেছে। যেটার অনুসারে ইউনিভার্সের সব থেকে ছোট পার্টিকাল ভাইব্রেট করা স্টিং এর মধ্যে মজুদ আছে।

প্যারালাল ইউনিভার্স এর অবস্থান

প্যারালাল ইউনিভার্স কয়েক রকমের হতে পারে। যেমন ধরেন, প্যারালাল ইউনিভার্স আমাদের থেকে অনেক দূরে মজুদ রয়েছে। আর এই অনেক দূরে বলতে লক্ষ লক্ষ লাইট ইয়ার্স দূরে বোঝানো হচ্ছে। এবং আর ও কিছুর সিদ্ধান্তের অনুসারে প্যারালাল ইউনিভার্স একেবারেই আমাদের পাশেই মজুদ রয়েছে। কিন্তু অন্য কোন ডায়মেনশনে রয়েছে। আর যদি এমনটাই হয়, তাহলে আমাদের ইউনিভার্সে বেশ কিছু ডাইমেনশন হতে পারে।

আমরা থ্রি ডায়মেনশনে থাকি। বিজ্ঞানীদের অনুসারে আমাদের ইউনিভার্স সুপার ইউনিভার্সের অংশ হতে পারে। যেটা নয়টি আলাদা আলাদা ডায়মেনশনে বিভক্ত রয়েছে। আর আমরা ম্যাথমেটিক্স এর সাহায্যে এই সমস্ত ইউনিভার্সের সম্পর্কে ধারনা পেতে পারি। ম্যাথমেটিক্স এই হচ্ছে ঐ মৌলিক বাস্তবতা যা, আমাদের ইউনিভার্সকে বুঝতে সাহায্য করে।

অ্যালেন গুথ (Alan Guth)

১৯৮০ সালে অ্যালেন গুথ (Alan Guth) ইনফ্লেয়েশন থিওরিকে সবার সামনে আনেন। যেখানে তিনি বলেন, বিগব্যাং-এর কয়েক মূহুর্ত পর মানে সেকেন্ডের হাজারও ভাগের মধ্যেই আমাদের ইউনিভার্স খুব দ্রুত গতিতে বড় হতে থাকে। যেটাকে আমরা বলি ইনফ্লেয়েশন। এই সময়ের বেবি ইউনিভার্স ভীষনই গরম ছিল। এরপর ইউনিভার্সের গতি স্লো হতে শুরু করে। এবং সেটি ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়ে যায়। এই থিওরি আমাদের ইউনিভার্সের সর্বশেষ ফিঙ্গারপ্রিন্ট কে সাজেস্ট করে। যেটা বিগ ব্যাং এর পর সৃষ্টি হয়েছিল।

বিজ্ঞানীরা বলেন যদি এই থিওরি সঠিক হয়, তাহলে আমরা এর প্রমাণ অবশ্যই পেতে পারি। মনে করুন, যদি আমরা সূর্যের আলোকে সরিয়ে দেই। রাতের আকাশে তারার আলোকেও সরিয়ে দেই। তারপর আমরা যদি আকাশের চারদিকে হাল্কা লাল আলোর চমক দেখতে পাই। তাহলে তা সঠিক। এই রেডিয়েশনকে বলা হয় কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড। এটাই বিগ ব্যাং এর সময়কার সর্বশেষ এনার্জি ছিল। যার পর ইউনিভার্স ঠান্ডা হতে থাকে।

ইনফ্লেয়েশন থিওরির প্রমাণ

অ্যালেন গুথ তার এই থিওরিতে, ম্যাথমেটিক্স এর সাহায্যে ইউনিভার্সের কসমিক রেডিয়েশনকে প্রীডিক্ট করে দেখিয়েছিলেন। যেটা এক প্রকারের টেম্পারেচার ভ্যারিয়েশন প্যাটার্ন ছিল। এটাকে এক প্রকারের ব্রম্মান্ডের ফিংগার প্রিন্টও বলা যেতে পারে। এই থিওরির ১০ বছর পর আমরা ডাবলো ম্যাপ নামের একটি মিশনের সাহায্যে, এই থিওরির বাস্তবতাকে দেখতে পাই। যা বিজ্ঞানীদের ভীষনই অবাক করে দেয়ার মত ছিল। এই মিশনের সাহায্যে আমারা ইউনিভার্সের যে টেম্পারেচার ভেরিয়েশনকে রেকর্ড করেছিলাম, তা প্রায় সম্পূর্ণরূপে ঐ প্যাটার্নের মতই ছিল। যা অ্যালেন গুথ কয়েক দশক পূর্বেই ম্যাথমেটিক্স এর সাহায্যে প্রীডিক্ট করে দেখিয়েছিলেন।

এর থেকে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি এবং বুঝতে পারি যে, ম্যাথমেটিক্স আমাদের ইউনিভার্সের মৌলিক সত্য। যার সাহায্য নিয়ে আমরা ইউনিভার্স কে প্রিডিক্ট করতে পারি।

আমরা ম্যাথমেটিক্স এর সাহায্যে অন্যসব ইউনিভার্স সম্পর্কেও ধারণা পেতে পারি। এরই সাথে আমাদের কাছে আরও একটি প্রমাণ রয়েছে। যেটা সম্ভাবিতরূপে মাল্টিভার্স হওয়ার প্রমাণ দেয়।

কোল্ড স্পট

আমাদের ইউনিভার্স এর একটি এলাকা প্রায় 180 কোটি লাইট ইয়ার্স দূরে ছড়িয়ে রয়েছে। আর অবাক করার মত বিষয় হল যে, এইটা আমাদের বাকি সব ইউনিভার্স এর অন্য সব জায়গার থেকে ভীষণ ঠান্ডা। এই স্থানটি ঠাণ্ডা এই কারণে যে, এইখানে ইউনিভার্সের অন্যসব স্থানের তুলনায় অনেক কম এনার্জি মজুদ আছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, এই স্থান টি অন্য কোন ইউনিভার্সের সাথে আমাদের ইউনিভার্সের স্পর্শ হওয়ার কারণে তৈরি হয়েছিল। যার ফলে এই খানকার সব এনার্জি আর বিষয় বস্তু গুলো আমাদের ইউনিভার্স থেকে বাইরে চলে গেছে। এর জন্যই এই এলাকা টি এতটা খালি।

কিন্তু এ সম্পর্কে আমাদের কাছে কোন সঠিক প্রমাণ নেই। কিন্তু ইউনিভার্সের এই স্থানটির নতুন এবং সঠিক কোন ম্যাপ তৈরি হলে, আমরা এই স্থানটি সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য জানবো। আর আমরা যদি এটাকে সম্পুর্ণরূপে প্রমান করতে পারি, তাহলে এই কোল্ড স্পট বা স্থানটি মাল্টিভার্স হওয়ার আরও একটি প্রমাণ হতে পারে। আর সেই সাথে এটাও প্রমাণ হবে যে, আমাদের ইউনিভার্সের মত আরও অগনিত ইউনিভার্স রয়েছে।

মাল্টিভার্সের এই থিওরি ইন্টারেস্‌টিং হলেও, কিছু বিজ্ঞানী এটাকে সম্পূর্ণ কল্পনা বা সাইন্টিফিক মুভি ভাবেন। আপনাদের কি মনে হয় এ সম্পর্কে? সেটা অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আর এই পোস্ট টি ভালো লাগলে, অবশ্যই শেয়ার করবেন।

You might also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More