স্বপ্ন যখন তোমার ব্যবসায়ী হওয়া! লক্ষ্য রাখুন এইসব বিষয়গুলো

আপনি কি ব্যবসায় সফল হতে চান তাহলে পড়ে ফেলুন এইসব বিষয়গুলো

আমাদের আশেপাশের মানুষ যারা প্রতিষ্ঠিত তারা  অনেকেই ব্যবসার সঙ্গে নিয়োজিত।  আমাদের দেশের অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী রয়েছে। আর তাদেরকে দেখে অনেকেরই ইচ্ছা তাদের মতো বড় বড় ব্যবসায়ী হবে। কিন্তু একজন ব্যবসায়ী হওয়া কিন্তু মুখের কথা নয়। অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে ব্যবসায়ী হওয়ার সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছাতে হয়।

শুধু রাত জেগে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখলেই ব্যবসায়ী হওয়া যায়না। ব্যবসায়ী হওয়ার পিছনে রয়েছে  কঠোর পরিশ্রমের ফসল।  চলুন জেনে নেই  সেই সব বিষয় গুলো যেগুলো একজন ব্যাবসায়ী ব্যক্তির মধ্যে থাকা যাবে না।

১. কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে

শুধু স্বপ্ন দেখতেই আনন্দ পান, বাস্তবায়নে নয় এই ধরনের লোকরা নিজেদেরকে প্রায়ই ‘আইডিয়া পিপল’ বা ‘ধারণা লোক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এরা শুধু তাদের স্বপ্ন নিয়ে গালগল্প করেই আনন্দ পান কিন্তু তা বাস্তবায়নের জন্য যে কঠোর পরিশ্রম দরকার তা করতে আগ্রহী নন।

২. ব্যবসায়িক দক্ষতা

প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে অনিচ্ছুক বা অক্ষম আমাদের মাঝে ব্যবসায়িক দক্ষতা অর্জন সম্পর্কিত বেশ কিছু অযৌক্তিক ধারণা প্রচলিত আছে। যেমন রকেট সায়েন্স সম্পর্কিত দক্ষতা শুধু শ্রেণিকক্ষ বা ল্যাব থেকেই অর্জন সম্ভব।

ইন্টারনেট প্রযুক্তির এই রমরমা সময়ে এ ধরনের অযৌক্তিক ধারণা বাতুলতারই নামান্তর। এখন ইন্টারনেট থেকে নিজে নিজেই যেকোনো বিষয়ের জ্ঞান ও দক্ষতা প্রায় বিনামূল্যেই অর্জন সম্ভব।

৩. সৎ মনমানসিকতা 

ব্যর্থ বা বিব্রত হওয়ার অযৌক্তিক ভয় প্রতিটি মানুষের মাঝেই অজানা বিষয়ের ভয় কাজ করে। বেঁচে থাকার জন্য এই ভয় দরকারিও বটে। কিন্তু ব্যবসায় সফল হতে গেলে এই অজানা ভয়কে অতিক্রম করতে হবে এবং ঝুঁকি গ্রহণ ও ব্যর্থতার মধ্য দিয়েই শিখতে হবে। অনেকে আবার ভয়ে পুরোপুরি হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকেন এবং যেকোনো মূল্যে ঝুঁকি এড়াতে চান। ফলে তাদের আর ব্যবসা করা হয়ে ওঠে না।

৪. অযৌক্তিক ভয়

সাফল্য মোকাবিলার অযৌক্তিক ভয় আমার প্রায়ই দেখি যে কিছু লোক আছেন, যারা সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও হাল ছেড়ে দেন। এটা সত্যি যে, কোনো ব্যবসায় অনেক তাড়াতাড়ি সাফল্য আসলে সেই ব্যবসার মৃত্যুও ঘটতে পারে। তবে সত্যিকার উদ্যোক্তারা ব্যর্থতা থেকে যেমন শিক্ষা গ্রহণ করেন তেমনি দ্রুত অর্জিত সাফল্য থেকেও শিক্ষা গ্রহণ করে সামনে এগিয়ে যান।

৪. বাস্তবমুখী

বাস্তববাদী না হয়ে বরং সবকিছুতেই নিখুঁত হতে চান এমন অনেকে আছেন যারা হয়তো গত ২০ বছর ধরেই কোনো একটি প্রযুক্তিপণ্য নিয়ে শুধু গবেষণাই করে যাচ্ছেন। কিন্তু বাজারজাত করতে পারছেন না। কারণ সেটিকে নিখুঁত করে তোলার জন্য তারা শুধু আরো গবেষণাই করে যেতে চান।

বর্তমান দুনিয়ার দ্রুত পরিবর্তনশীল বাজার ব্যবস্থায় নিখুঁত হওয়ার এই চেষ্টা ভাসমান এবং বাস্তবতার বোধশূন্য। বাস্তববাদীরা কোনো পণ্য মোটামুটিভাবে ভোগযোগ্য হলেই তা বাজারজাত করেন। এরপর তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে সাফল্যের পথে এগিয়ে যান।

৬. ফোকাস ঠিক রাখা

ফোকাস ঠিক রাখা এবং বিক্ষিপ্ততা মোকাবিলায় অক্ষম কোনো ব্যবসায় উদ্যোগে সাফল্যের মূল চাবিকাঠি ফোকাস ঠিক রাখা। একই উদ্যোগের মাধ্যমে অসংখ্য বাজারে অসংখ্য জিনিস বিক্রির চেষ্টা করা করলে তাতে কোনো কিছুতেই সাফল্য আসে না। এতে বরং কাস্টমাররা হতাশ হন।

ফোকাস ঠিক রাখার মানে হলো, অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোতে অনড় থাকা, জরুরি থেকে গুরুত্বপূর্ণকে আলাদা করা, সংগঠিত করা ও প্রতিনিধিত্ব করা।

৭. ব্যর্থতা তৈরি

অজুহাত তৈরি করে দায়-দায়িত্ব এড়ানো ব্যর্থতাগুলোকে মেনে নেওয়ার যৌক্তিক ভিত্তি সৃষ্টির জন্যই সাধারণত অজুহাত তৈরি করা হয়। এর মধ্যদিয়ে আসলে নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা করা হয়। সত্যিকার উদ্যোক্তারা কখনো অজুহাত খাড়া করে নিজেদের ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব এড়িয়ে যান না।

তারা বরং বাস্তব কোনো বাধা-বিপত্তিকে মেনে নিয়ে বিকল্প পথে পুনরায় চেষ্টা করেন। বা সৃজনশীলতার মাধ্যমে সমস্যার মোকাবিলার চেষ্টা করেন।

৮. ইতিবাচক মনোভাব

নিজে শুরু করা, নেতৃত্ব দেওয়া বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষম এরা হলেন শিল্প বিপ্লবের ফল। কী করতে হবে তা বলার জন্য এরা অন্যদের ওপর নির্ভর করেন। এরপর ভুল করে নিজেদেরকে পরিস্থিতির শিকার বলে ভান করে আনন্দ পান।

কিন্তু সত্যিকার উদ্যোক্তারা কী করতে হবে। না করতে হবে তা নিজেরাই নির্ধারণ করেন, ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখেন, নিজেই অন্যদের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ হয়ে ওঠেন এবংঅনুসরণীয় নেতৃত্বদানের মাধ্যমে সামনে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More