দুই পণ্ডিতের লড়াই আবির্ভাব ঘটাল গণনা পদ্ধতির!!
আবির্ভাব ঘটল গণনা পদ্ধতির দুই পণ্ডিতের মাধ্যমে
আমাদের জীবনে প্রতিটা সময় যেন হিসাব-নিকাশের জড়িত। হিসাব-নিকাশ ছাড়া একটা সময় চলে না। কিন্তু একবার ভেবে দেখলেই বোঝা যায় যে এই হিসাব নিকাশ এর পেছনেই রয়েছে গণনা পদ্ধতি। যদি গণনা পদ্ধতি না থাকতো তাহলে কিভাবে হিসাব করা হতো। আর গণনা পদ্ধতি কবে নাগাদ শুরু হয়েছে।
আর কীভাবেই বা এল এ গণনা পদ্ধতি। চলুন জেনে নেয়া যাক গণনা পদ্ধতি আসার গল্পটি। একদিন বাধল দুই পণ্ডিতের লড়াই। যিনি সবচেয়ে বেশি সংখ্যা বলতে পারবেন, জিতবেন তিনিই। একজন জিতলেন। বেড়ে গেল তাঁর খ্যাতি। কত পর্যন্ত বলেছিলেন তিনি? মাত্র ৩ পর্যন্ত। ৩-এর পরে কী হয়, মানুষ জানে না।
তাই তার নাম দিল অনেক। ৪ হলেও অনেক, ১২ হলেও অনেক। তাদের কাছে ৪-ও যা ৪ লাখও তা। তখন মানুষ থাকত ছোট ছোট দলে। ছোট ছোট সংখ্যা হলেই তাদের চলে যায়। তাই বড় সংখ্যার দরকার হয় না। আবার হয়ও। একেকজনের অনেকগুলো ছেলেমেয়ে হতো সে যুগে। তাদের এক-আধজন যদি হারিয়ে যায়, বুঝবে কী করে?
সুতরাং, সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। কীভাবে? লিখতে তো তারা জানে না। নেই কোনো লিপিও। তাহলে? হাতের আঙুল আছে না? একটা আঙুল একটা সংখ্যা। কিন্তু টুকে রাখার দরকার হয় যদি? তাহলে ছবি আঁকতে হবে। হাতের কিংবা আঙুলের। একটা আঙুল মানে ১। একটা হাতের ছবি মানে ৫।
কারণ পাঁচ আঙুল আছে হাতে। কিন্তু বড় বড় সংখ্যা এলেই কুপোকাত! সে সমাধানও এল। হাতের আঙুল, পুরো হাত এগুলোর সঙ্গে আরও কিছু ছবি যোগ করে হিসাব রাখা হলো বড় সংখ্যার। আজগুবি মনে হচ্ছে? প্রাচীন মিসরের একটা হিসাব পাওয়া গেছে।
সাত-আট হাজার বছরের পুরোনো। যুদ্ধে হেরে যাওয়া এক রাজা বিজয়ী রাজাকে উপহার পাঠিয়েছেন। গরু, ছাগল, মানুষ ইত্যাদি। তারই হিসাব রয়েছে প্যাপিরাসের বাকলে। হিসাবগুলো আছে ছবি আকারে। সেই খতিয়ানে ছাগলের সংখ্যা কত জানেন। ১৪ লাখেরও বেশি। শুধু কয়েকটা ছবি এঁকেই এতগুলো ছাগলের হিসাব দেওয়া হয়েছে ভাবা যায়!
ধীরে ধীরে মানুষ আরও পরিচ্ছন্ন সংখ্যা আবিষ্কার করল। গ্রিসে, চীনে, মধ্যপ্রাচ্যে, ভারতে। সেগুলোর কোনোটাই আজকের সংখ্যার মতো নয়। ১০টি সংখ্যাও আবিষ্কৃত হলো। বুঝল না কেবল শূন্যের কদর। আর্কিমিডিস, পিথাগোরাস, ইউক্লিডের মতো জগদ্বিখ্যাত গণিতবিদেরাও শূন্যের ব্যবহার জানতেন না।
১০১ লিখতে দুটো একের মাঝখানে শূন্য লাগে। এর চেয়ে বড় অনেক সংখ্যাতেই মাঝখানে দরকার হয় শূন্যের। শূন্যই যদি না থাকে, ১০১ আর ১১-এর মধ্যে তফাত কিসের? সেই শূন্য আবিষ্কার করলেন আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের এক গণিতবিদ।
Comments are closed.